ঢাকার সাভারে রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ভবন মালিক ও কারখানা মালিকদের নামে করা মামলায় সোহেল রানাকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করেছে আপিল বিভাগ।
আগামী ১০ জুলাই পর্যন্ত জামিন স্থগিত করেছে আদালত। একই সঙ্গে জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিলের শুনানির জন্য ১০ জুলাই দিন ঠিক করা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ আপিল বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।
আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. কামরুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
এর আগে গত ৬ এপ্রিল সোহেল রানার জামিন প্রশ্নে রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি শাহেদ নুরুউদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে জামিন দেন।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষ জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করলে ৯ এপ্রিল চেম্বার বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী দুপক্ষের শুনানি শেষে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন ৮ মে পর্যন্ত স্থগিত করেন। একই সঙ্গে আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠান।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে রানা প্লাজা ধসের ঘটনা ঘটে। এতে ভবনের নিচে চাপা পড়ে সাড়ে পাঁচ হাজার পোশাক শ্রমিক। ওই ঘটনায় এক হাজার ১৩৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রায় দুই হাজার শ্রমিক আহত ও পঙ্গু হয়। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে দুই হাজার ৪৩৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
এই ঘটনায় সাভার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়ালী আশরাফ ভবন নির্মাণে অবহেলা ও ত্রুটিজনিত হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন— রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা, রানার বাবা আব্দুল খালেক, রানার মা মর্জিনা বেগম, সাভার পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড কমিশনার হাজি মোহাম্মদ আলী, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক (আর্কিটেকচার ডিসিপ্লিন) এ টি এম মাসুদ রেজা, প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসাইন, সাভার পৌরসভার মেয়র মো. রেফাতউল্লাহ, সাভার পৌরসভার সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায়, নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, সাবেক উপ-সহকারি প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান রাসেল, সাভার পৌরসভার সাবেক টাউন প্ল্যানার ফারজানা ইসলাম, লাইসেন্স পরিদর্শক মো. আব্দুল মোত্তালিব, পৌরসভার সাবেক সচিব মর্জিনা খান, সাবেক সচিব মো. আবুল বাশার প্রমুখ।
২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় ৫৯৪ জনকে সাক্ষী করা হয়। পরের বছরের ১৮ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এস এম কুদ্দুস জামান।