ঈদ সংখ্যার রেসিপি দেওয়ার অনুরোধ জানাতেই একবাক্যে রাজি হয়ে গেলেন ফাহমিদা নবী। আমরা চেয়েছিলাম পাঁচটি পদ, কিন্তু ঈদ বলে কথা। তিনি কয়েক পদ বাড়তি করলেন। সেমাই, মাংস, কোর্মা থেকে শুরু করে সবজি ও জুসের রেসিপি দিলেন। এসব আয়োজনের মধ্যেই বললেন, ‘এখন রান্নাবান্নায় আরো সাশ্রয়ী হতে হবে আমাদের। চেষ্টা করতে হবে একটা উপকরণ দিয়ে কয়েকটা আইটেম রান্নার। যেমন—মুরগির মাংস দিয়ে শুধু তরকারি রান্না না করে খানিকটা দিয়ে সালাদ, স্যুপ, নুডলস বা সবজি করা যেতে পারে। খাদ্যদ্রব্য থেকে চিনি ও মসলার ব্যবহার কমিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে। একটু সচেষ্ট হলেই রান্নাবান্নায়ও আমরা অনেকটা সাশ্রয়ী হতে পারি। এতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির চাপ থেকেও অনেকটাই রেহাই পাওয়া সম্ভব।’
ক্যাপসিকাম সালাদ:
উপকরণ: ক্যাপসিকাম তিন রঙের তিনটি, চিংড়ি মাঝারি আকারের ১০-১২টি, মটর, ভুট্টা ও বেদানা দানা তিন-চার চামচ করে, কাঁচা মরিচ চারটি, পেঁয়াজ একটি কুচি করা, লবণ পরিমাণমতো, বাটার চার চামচ, গার্লিক মেয়নিজ আধা কাপ এবং রসুন তিন-চার কোয়া।
যেভাবে তৈরি করবেন:
১. প্রথমে ক্যাপসিকামগুলো দুই টুকরা করে এক ভাগের ভেতর পরিষ্কার করে রাখুন। বাকি আধা ভাগ পাতলা লম্বা টুকরা করে নিন। চিংড়ি রসুন ও লবণ দিয়ে সিদ্ধ করে অর্ধেকটা কুচি করে কেটে নিন।
২. চুলায় কড়াইয়ে বাটার দিয়ে পেঁয়াজ এক মিনিট নেড়ে ক্যাপসিকাম কুচি, কাঁচা মরিচ, চিংড়ি দিয়ে একটু নেড়ে লবণ দিয়ে চুলা বন্ধ করে দিন।
৩. এরপর গার্লিক ও মেয়নিজ দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে তুলে নিন। কড়াইয়ে আরেকটু বাটার দিয়ে মটর, ভুট্টা দানা ও কুচি করা চিংড়ি দিয়ে একটু ভেজে লবণ ও মেয়নিজ দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নেড়ে ঢাকনা দিয়ে কিছুক্ষণ রেখে নামিয়ে নিন।
৪. পরিষ্কার করে রাখা আধা ক্যাপসিকামগুলো বাটার ব্রাশ করে একটু পুড়িয়ে নিন। এবার মটর-ভুট্টার সঙ্গে ডালিম দানা মিশিয়ে পরিবেশন করুন।
মাল্টার জুস:
উপকরণ: মাল্টা একটি, চিনি চার চামচ, আইস কিউব ছয়-সাতটি, লেবু দুই টুকরা, পেপসি দুই টেবিল চামচ এবং কাঁচা মরিচ ফালি করা একটি।
যেভাবে তৈরি করবেন:
১. হাত দিয়ে চেপে মাল্টা থেকে জুস বের করে নিন।
২. এই রসে সামান্য পানি, পেপসি ও লেবুর রস মিশিয়ে নিন। সামান্য চিনি ও আইস কিউব দিন। উপকরণগুলো একটি কাঠি দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে একটি গ্লাসে ঢেলে পরিবেশন করুন।
ছেঁচা মসলায় গরুর মাংস:
উপকরণ: গরুর রানের মাংস চার কেজি, পেঁয়াজ ছেঁচা চার টেবিল চামচ, আদা ছেঁচা চার চা চামচ, রসুন ছেঁচা চার চা চামচ, হলুদ গুঁড়া চার চা চামচ, মরিচ গুঁড়া চার চা চামচ, ধনে গুঁড়া চার চা চামচ, তেজপাতা চারটি, লবঙ্গ, এলাচ, দারচিনি চারটি করে ছেঁচে নেওয়া, সয়াবিন তেল এক কাপ, লবণ পরিমাণমতো এবং আস্ত জিরা সামান্য ছেঁচে নেওয়া দুই চা চামচ।
যেভাবে তৈরি করবেন:
১. গরুর মাংস ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে সব মসলা দিয়ে মেখে প্রেশারকুকারে তুলে দিন।
২. সিদ্ধ হলে নামিয়ে পরিবেশন করুন।
কিমা আলুর চপ:
উপকরণ: আলু ৫০০ গ্রাম, মুরগির কিমা ২৫০ গ্রাম, আদা বাটা দুই টেবিল চামচ, ধনেপাতা কুচি এক টেবিল চামচ, শুকনা মরিচ গুঁড়া দুই চা চামচ, বেসন ২৫০ গ্রাম, লবণ স্বাদমতো এবং তেল পরিমাণমতো।
যেভাবে তৈরি করবেন:
১. প্রথমে আলু সিদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে চটকে নিন।
২. বেসনে অল্প তেল মিশিয়ে ফেটিয়ে নিন।
৩. আলু ও বেসনের মিশ্রণে সব উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে লেচি কেটে নিন।
৪. কড়াইয়ে তেল গরম করে লেচিগুলো ডুবোতেলে ভেজে গরম গরম পরিবেশন করুন।
মুরগির কোর্মা:
উপকরণ: মুরগি একটি সাত টুকরা করা, পেঁয়াজ বাটা আধা কাপ, আদা বাটা দেড় চা চামচ, রসুন বাটা এক চা চামচ, পানি ঝরিয়ে নেওয়া টক দই তিন টেবিল চামচ, ঘি তিন টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, চিনি পরিমাণমতো, দারচিনি এক টুকরা, এলাচ চারটি, তেজপাতা একটি, কাঁচা মরিচ পাঁচটি এবং বেরেস্তা পরিমাণমতো।
যেভাবে তৈরি করবেন:
১. মুরগির মাংস ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে পেঁয়াজ বাটা, আদা বাটা, রসুন বাটা, টক দই ও লবণ দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে রেখে দিন।
২. কড়াইয়ে দুই টেবিল চামচ ঘি গরম করে মুরগির মাংস দিয়ে ১৫ মিনিট মাঝারি আঁচে রান্না করুন এবং ঢিমে আঁচে আরো ১০ মিনিট মাংস সিদ্ধ হওয়া পর্যন্ত জ্বাল দিন।
৩. এরপর সামান্য চিনি, কাঁচা মরিচ ও এলাচ দিন। এরপর বাকি ঘিটুকু দিয়ে আরো পাঁচ মিনিট আঁচে রাখুন। ঘি ওপরে ভেসে উঠলে আঁচ কমিয়ে ওপরে বেরেস্তা ছড়িয়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন।
দুধ সেমাই:
উপকরণ: সেমাই ২০০ গ্রাম, চিনি আধা কাপ, এলাচ তিনটি, দারচিনি তিন টুকরা, তেজপাতা একটি, দুধ এক লিটার, বাদাম ও কিশমিশ পরিমাণমতো।
যেভাবে তৈরি করবেন:
১. দুধ জ্বাল দিয়ে কমিয়ে এনে চিনি দিয়ে দিন।
২. এরপর এলাচ, দারচিনি ও একটি তেজপাতা দিন।
৩. সেমাই ঘিয়ে ভেজে নিন।
৪. দুধ হয়ে এলে একটি পাত্রে নামিয়ে একটু ঠাণ্ডা করে তাতে সেমাই ঢেলে দিন।
৫. এরপর সেমাইয়ের ওপরে বাদাম ও কিশমিশ ছড়িয়ে হালকা গরম থাকতেই পরিবেশন করুন।