জেলায় জেলায় তাপপ্রবাহের সতর্কতা! এমন দাবদাহে শরীরের দাবানল নেভাতে মাথায় রাখুন এই টিপসগুলি

বেলা বাড়তেই গরমের দাপটে টেকা দায়। এমন তাপপ্রবাহের মুখে বিভিন্ন অসুখ শরীরকে ঘিরে ধরে। সুস্থ থাকতে কী কী পদক্ষেপ নেবেন? আসুন জানা যাক।

অ্যামাজনের গ্রেট সামার সেলের শেষদিন- স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, এসির এবার সবচেয়ে সস্তায়
ফের রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে সূর্যদেব। বেলা বাড়তেই রোদের দাপটে বাইরে বেরনো যাচ্ছে না। চলছে তাপপ্রবাহ। আর আবহাওয়া যে ফের তপ্ত হয়ে উঠবে, তা আগেভাগেই জানিয়ে রেখেছিল হাওয়া অফিস। তাঁদের কথায়, ধূর্ণিঝড় মোকা আমাদের রাজ্য থেকে অনেকটা পরিমাণে জলীয় বাষ্প টেনে নিয়েছে। ফলে রাজ্যের আবহাওয়া হয়েছে শুষ্ক। এর থেকেই বাড়ছে তাপপ্রবাহের আশঙ্কা।

এমন তীব্র জ্বালাপাোড়া বহু বছর সইতে হয়নি বঙ্গবাসীকে। এবার যেন সব রেকর্ড ভাঙার তাগিদেই ব্যাট ধরেছে গ্রীষ্ম। সকালের পাশাপাশি রাতের তাপমাত্রাও থাকছে উপরের দিকে। তার উপর আবার ইলেকট্রিকের যাওয়া-আসা তো লেগেই রয়েছে। বিশেষত, রাতেরবেলায় পাওয়ার কাট তো এখন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে সারাদিন গলদঘর্ম হয়ে কাটানোর পর যে রাতে শান্তিতে ঘুমাবেন, তারও উপায় নেই।

প্রসঙ্গত, এমন দাবদাহতেই বাড়ছে একাধিক অসুখের আশঙ্কা। বিশেষ করে, হিট স্ট্রোক, হিট এক্সহউশন ও ডিহাইড্রেশনের মতো সমস্যায় অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই বর্তমান তাপপ্রবাহের হাত থেকে বাঁচার জন্য আপনাকে অবশ্যই কয়েকটি নিয়ম মেনে চলতে হবে-

​১. সকালে বাইরে না বেরনোই ভালো​: ​হেলথলাইন জানাচ্ছে, তীব্র গরমে সকালের দিকে বাইরে না বেরনোই ভালো। ঘরের ভিতরে অন্তত সরাসরি সূর্যের আলো গায়ে লাগবে না। এতেই শরীর সুস্থ থাকতে পারবে। হিট স্ট্রোক ও হিট এক্সহউশন এড়ানো যাবে।

তাই বিশেষজ্ঞরা এমন দহনদিনে বেলা ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ঘরের বাইরে পা দিতে মানা করছেন। এই নিয়মটুকু মেনে চলতে পারলেই বহু ঘাতক অসুখ থেকে বাঁচা যায়। তবে অনেককে পেটের তাগিদে রোদ মাথায় নিয়েই বেরতে হচ্ছে। তাঁদের আরও বেশি করে সচেতন থাকা দরকার।

​২. বাইরে বেরলে ছাতা, টুপি, সানস্ক্রিন হল মাস্ট​: দিনের বেলায় বাইরে বেরলে চোখে-মুখে লাগছে লু। যেন আগুনের ঝলকা শরীরকে ছুঁয়ে যাচ্ছে! এমন পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করতে চাইলে আপনাকে ছাতা, টুপি সঙ্গে নিতেই হবে। ছাতা ও টুপি সরাসরি মাথায় সূর্যের আলো পড়তে দেয় না। এতে কিছুটা হলেও হিট এক্সহউশন ও হিট স্ট্রোকের আশঙ্কা কমে।

আর বাইরে বেরনোর আগে সানস্ক্রিন মাখা জরুরি। এর মাধ্যমেই সূর্যের আলট্রা ভায়োলেট রে-এর হাত থেকে ত্বককে বাঁচাতে পারবেন। এমনকী আটকানো যাবে সানবার্ন।

৩. নিয়মিত জলপান জরুরি​: গরমে সুস্থ থাকতে চাইলে আপনাকে নিয়মিত জলপান করতে হবে। এটাই তাপপ্রবাহের দিনগুলিতে আপনার ব্রহ্মাস্ত্র। এক্ষেত্রে দিনে অন্ততপক্ষে ৩ থেকে ৪ লিটার জলপান জরুরি। এতেই শরীরে জলের ঘাটতি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব। বিশেষজ্ঞদের কথায়, এই সময়ে জলের পাশাপাশি ওআরএস, ডাবের জল খাওয়াও চালিয়ে যেতে হবে। এতে দেহে ইলেকট্রোলাইটসের ব্যালান্স ফেরে। এছাড়া ফলের রস, ঘোল, লস্যিও খাওয়া চলতে পারে। তবে রাস্তার ধারে বিক্রিত কাটা ফলের রস কিনে খাবেন না। এতে সংক্রমণের আশঙ্কা বদ্ধি পায়।

​৪. হালকা খাবার খান: তীব্র গরমে পুড়ছে বঙ্গভূমি। এই সময়ে সুস্থ থাকতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই ডায়েটের দিকেও নজর ফেরাতে হবে। তাপপ্রবাহের দিনগুলিতে খাওয়া যাবে না রিচ খাবার। কারণ তেল, মশলা যুক্ত খাবার শরীর এই সময় হজম করে উঠতে পারে না। তাই চেষ্টা করুন এই কয়েকটা দিন হালকা খাবার খাওয়ার। ডাল, ভাত, একটা হালকা তরকারিতেই দুপুরের খাবার সেরে নিন। আর রাতে চলতে পারে রুটি-তরকারি। এতেই শরীর সুস্থ থাকবে। হজমের গোলোযোগ অনায়াসে এড়ানো যাবে।

​৫. সুযোগ পেলেই স্নান করুন​: এই গরমে সময়-সুযোগ পেলেই স্নানটা সেরে ফেলুন। দিনে ৩ থেকে ৪ বার স্নান করাই যেতে পারে। এতে কোনও সমস্যা নেই। মনে রাখবেন, এই সময় ঠান্ডা জলে স্নান করতে পারলে শরীর ঠান্ডা থাকবে।

এছাড়া এই সময়টায় মদ্যপান, ধূমপান কমিয়ে ফেলুন। এই দুই নেশা কিন্তু তাপদাহের দিনে বিপদের দূত। তাই সুস্থ থাকতে চাইলে এমন বদভ্যাস ত্যাগ করার চেষ্টা করুন। আশা করছি সুস্থ থাকতে পারবেন।

Leave a Comment