শতরূপা কর্মকার: মানবদেহের পরিপাকতন্ত্রে লক্ষ লক্ষ অণুজীব বা ব্যাকটেরিয়া রয়েছে, যার মধ্যে ভাল এবং খারাপ উভয় ধরণের ব্যাকটেরিয়াই থাকে। অন্ত্রে এই ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য দেহের সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিপাকতন্ত্রে খারাপ ব্যাকটেরিয়ার মাত্রা বৃদ্ধি পেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। অপর দিকে ভালো ব্যাকটেরিয়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ভালো ব্যাকটেরিয়া বা প্রোবায়োটিক তাই পরিপাকতন্ত্রের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী। এটি হজমে সাহায্য করে এবং প্যাথোজেন থেকে দেহকে রক্ষা করে। তাই হজমের গণ্ডগোলে ও সুস্থ থাকার জন্য দেহে ভালো এবং খারাপ ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা উচিত।
প্রোবায়োটিক হল এমন কিছু জীবন্ত ব্যাকটেরিয়া যা পরিপাকতন্ত্রে উপস্থিত থেকে হজমে সাহায্য করে। পুষ্টিবিদদের মতে তাই প্রতিদিন পাতে নিয়ম করে কিছু খাবার অবশ্যই রাখা উচিত। যার মধ্যে দই অন্যতম। হজমের গণ্ডগোলে দই খুব উপকারী একটি খাবার। দই পরিপাকতন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে ফলে খাদ্য হজমও হয় ভালো ভাবে।
তবে দই খাওয়ার পাশাপাশি মেনে চলতে পারেন চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের আরও কিছু পরামর্শ। তার মধ্যে প্রধান হল বেশি ফাইবার যুক্ত খাবার খাওয়া। প্রতিদিনের খাবারের উপকরণ যেমন ডাল, কলা, বাদাম, শসা, দানা শস্যর মধ্যেই বেশি ফাইবার রয়েছে। প্রতিদিন খাবার পাতে এগুলি রাখলে পাকস্থলীর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
এছাড়াও দেহে প্রয়োজন পর্যাপ্ত কার্বোহাইড্রেট। লাল আটা, রাজমা, চাল ও ওটসে দেহের জন্য পর্যাপ্ত কার্বোহাইড্রেট থাকে। এর পাশাপাশি পরিশ্রুত কার্বোহাইড্রেট যেমন ময়দা, চিনি, ময়দা দিয়ে তৈরি যেকোনও খাবার প্রতিদিনের খাবারের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া উচিত। হজমের গণ্ডগোল, খাবার খাওয়ার ইচ্ছে না হওয়া বা পাকস্থলীতে জ্বালা করলে তার অন্যতম কারণ হতে পারে দেহে খারাপ ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি। অনিয়মিত বা অপর্যাপ্ত খাবার খাওয়ার জন্য এটি হতে পারে। তাই নিয়ম করে সময়ে খাবার খেলে এই সমস্যা থেকে রেহাই মেলে।
যদিও দেহে মানসিক চাপ অন্ত্রের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। ঘুমের সময়সূচী বজায় রাখা, বেশি করে জল খাওয়াও অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।