এবারের গরমের নানা খামখেয়ালিপূর্ণ আচরণ দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে একটা হল ঠোঁট ফাটা। যা নিয়ে নানা মহল খুব আশ্চর্য। দিনের প্রখর রোদে ৮-১০ মিনিট থাকলেই গরমে শরীর পুড়ে যাচ্ছে, তেষ্টা পাচ্ছে, শরীর তেতে উঠছে। কীরকম একটা হাঁসফাঁস অবস্থা হচ্ছে। সব মিলিয়ে শরীরে নানা অস্বস্তি। গরমে এরকম প্রত্যেকবারই হয়। এবারেও হচ্ছে। কিন্তু সব চেয়ে আশ্চর্যজনক যে ঘটনা ঘটছে এবার, তা হল ঠোঁট ফাটা। এর সঙ্গে আমরা সাধারণত শীতেই পরিচিত। কিন্তু এই ভয়ংকর গরমে এই ভয়ংকর দাবদাহে কেন শীতকালের মতো ঠোঁট ফেটে যাচ্ছে?
বেশিক্ষণ রোদে থাকলে দর দর করে ঘাম ঝরার কথা, এবার কিন্তু এমনটা হচ্ছে না। চিকিৎসক ও আবহাওয়াবিদেরা এবারের গ্রীষ্মের এই ব্যতিক্রমী গরম ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলছেন, এবারে বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকায় এমনটা ঘটছে। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, এপ্রিলে সাধারণত জেলায় বাতাসের আর্দ্রতা ৭০-৮২ শতাংশের মতো থাকে। তবে ইদানীং এই আর্দ্রতা নেমেছে।
কেন আর্দ্রতা কম থাকছে?
আর্দ্রতা কম থাকার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, সাধারণত ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যে বাতাস প্রবাহিত হয়, তা উত্তর থেকে পশ্চিম দিকে যায়। ফলে ওই বাতাস শুষ্ক থাকে ও আর্দ্রতা কম থাকে। যে কারণে শীতকালে মানুষের ঠোঁট ফাটে এবং ঘাম কম হয়।
গ্রীষ্মে বাতাস কেন আর্দ্রতাপূর্ণ হয়, কীভাবে হয়?
এদিকে, মার্চ থেকে পুরো বর্ষাকাল পর্যন্ত বাতাস দক্ষিণ থেকে পশ্চিম দিকে যায়। সেই বাতাসের সঙ্গে বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢুকে পড়ে। এতে বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে যায়। ফলে সামান্য তাপমাত্রা বাড়লেই জলীয় বাষ্পের সংস্পর্শে এলেই ঘাম ঝরা বেড়ে যায়। শ্বাসের সঙ্গে শরীরে আর্দ্রতাপূর্ণ বায়ু প্রবেশ করায় ঘাম ঝরার পরও শরীর খুব বেশি ক্লান্ত হয় না, জ্বালাপোড়ার অনুভূতিটা কম হয়।
কী ভাবে রুখবেন এটা?
এবারের গরমের এই খামখেয়ালিপূর্ণ আচরণের কথা বাদ দিলে মোটামুটি যে-যে কারণে ঠোঁট ফাটে, সেগুলি হয়তো আমরা সবাই জানি।
জল কম খাওয়া
বহুক্ষণ বাইরের শুষ্ক আবহাওয়ায় থাকা
বার বার জিভ দিয়ে ঠোঁট চাটা
লিপ বাম নিয়মিত ব্যবহার না করা
খুব বেশি ভিটামি-এ এবং ভিটামিন-বি১২ কনজিউম করা
এবার এই কোনটির জন্য আপনার ঠোঁট ফাটছে সেটা আপনাকে খুঁজে দেখতে হবে এবং সেটা থেকে সরে আসতে হবে।