গরমে নাজেহাল অবস্থা রাজ্যবাসীর। চড়া রোদ মাথায় নিয়ে যেতে হচ্ছে কাজে। বাইরে থেকে ঘুরে আসার পরেই ঢক ঢক করে ঠান্ডা জল খেতে ভালো তো লাগেই! তাই এই প্রখর গরমে ফ্রিজ ভর্তি করে সারি সারি ঠান্ডা জলের বোতল সাজানো থাকে অনেকের বাড়িতেই। কিন্তু জানেন কী, শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে এই ঠান্ডা জল?
এই গরমে ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি এড়াতে চিকিৎসকেরা প্রচুর পরিমাণে জল পান করার পরামর্শ দিচ্ছেন। রোদ থেকে বাড়ি ফিরেই ঢক ঢক করে ঠান্ডা জল খেলেই যে গরমের হাত থেকে নিস্তার মিলবে, তা নয়। বরং গরমে দিনের পর দিন এই ভাবে ফ্রিজের ঠান্ডা জল খেলে বাড়তে পারে শারীরিক সমস্যা। চিকিৎসকদের মতে, ঠান্ডা জল শরীরে ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি করে এবং হজম প্রক্রিয়াকেও ধীর করে দেয়। আসুন জেনে নেওয়া যাক ঠান্ডা জলের খেলে কী কী সমস্যা হতে পারে.
মাইগ্রেন: মাইগ্রেনের সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। রোদে ঘুরলে অনেকের মধ্যেই মাইগ্রেনের লক্ষণগুলো জোরাল হতে শুরু করে। তারপর বাইরে থেকে ফিরেই বেশি ঠান্ডা জল খেলে খেলে মাইগ্রেনের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
দাঁতের যন্ত্রণা: কনকনে ঠান্ডা জল খেলে দাঁতের যন্ত্রণা শুরু হয়ে যেতে পারে। বিশেষত, যাঁদের ক্যাভেটি বা সেনসিটিভির সমস্যা রয়েছে, তাঁদের পক্ষে ঠান্ডা জল এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
হজমের সমস্যা: এই বদঅভ্যাস আপনার মধ্যে হজমের ব্যাঘাতও ঘটাতে পারে। ঠান্ডা জলের কারণে পাকস্থলী সংকুচিত হয়, যা খাওয়ার পর হজম প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তোলে। এ কারণে খাবার হজমের সমস্যা হতে পারে। ঠান্ডা জল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, পেট ফাঁপা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়।
হৃদরোগের ঝুঁকি: অতিরিক্ত পরিমাণে ঠান্ডা জল খেলে হৃদরোগের ঝুঁকিও তৈরি হয়। রোদে বেরোনোর পর শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। তারপর যখনই আপনি ঠান্ডা জল গলায় ঢালেন তখন সব শরীরের রক্তনালি সঙ্কুচিত হয়ে যায়। এতে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। এছাড়া যে স্নায়ুগুলি হৃদ্স্পন্দন নিয়ন্ত্রন করে, সেগুলো ঠান্ডা জল খাওয়ার ফলে শিথিল হয়ে যায়। এর ফলে হৃদস্পন্দন ধীর হয়ে যায়।
ওজন বৃদ্ধি: খুব বেশি ঠান্ডা জল পান করলে চর্বি ঝরানো কঠিন হয়ে পড়ে। ঠান্ডা জল শরীরের চর্বি শক্ত করে দেয় যার কারণে চর্বি ঝরতে সমস্যা হয়। অতিরিক্ত ঠান্ডা জল পান করলেও ওজন বাড়তে পারে।
সুতরাং ঠান্ডা জলের এই সমস্ত ক্ষতিকর দিক এড়াতে, ঘরের তাপমাত্রায় থাকা জলই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তাই গরমে স্বস্তি পেতে আপনি ঘরের তাপমাত্রায় থাকা জলের সঙ্গে ফ্রিজের ঠান্ডা জল মিশিয়ে খেতে পারেন।