গরমে কাশি

কাশি সব সময় বিরক্তিকর ও তীব্র অসহ্যকর অবস্থার সৃষ্টি করে। কাশি নিজে কোনো রোগ নয় তবে বড় ধরনের কিছু রোগের লক্ষণ। শারীরিক, মানসিক, পরিবেশগত নানা কারণে সৃষ্টি হয় কাশির। এমনকি বয়ঃসন্ধিও কখনো কখনো কাশির কারণ হতে পারে।

স্থায়িত্ব অনুযায়ী কাশিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। তিন সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী কাশিকে বলা হয় অ্যাকিউট কাশি। তিন থেকে আট সপ্তাহ পর্যন্ত কাশি স্থায়ী হলে তাকে বলা হয় সাব-অ্যাকিউট কাশি। আর আট সপ্তাহের বেশি কাশি হলে তাকে বলা হয় ক্রনিক কাশি।

যে কারণে কাশি হয়: ঠাণ্ডা বা গরমে ঘাম বসে যাওয়া ছাড়াও কাশির অজস্র কারণ আছে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায়। এর মধ্যে প্রধান চারটি কারণ

– ইনফ্লামেটরি বা প্রদাহজনিত কাশি। মূলত শ্বাসনালি বা ফুসফুসে রক্ত চলাচল বেড়ে গিয়ে এই কাশির সৃষ্টি।

– মেকানিক্যাল অর্থাৎ বাইরে বা ভেতর থেকে তৈরি হওয়া কোনো চাপের ফলে সৃষ্ট কাশি।

– কেমিক্যাল অর্থাৎ সিগারেট, বিড়ি বা কোনো তামাক জাতীয় বস্তু গ্রহণ করার জন্য কাশি।

– থার্মাল আবহাওয়া। হঠাৎ ঋতু পরিবর্তনের সময় এখন যে কাশি চারদিকে মানুষের হচ্ছে তা এই ধরনের কাশির মধ্যে পড়ে।

আবহাওয়াজনিত কাশি হলে: ঋতু পরিবর্তনের সময় নিজেকে অতিরিক্ত ঠাণ্ডা লাগা কিংবা গরম লাগা থেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। বিশেষ করে এই সময়ে শিশু ও বয়স্কদের যত্ন নেওয়া অতি জরুরি। কারণ আবহাওয়ার পরিবর্তন শিশু ও বয়স্কদের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। সাধারণ সর্দি, কাশি, জ্বরের পাশাপাশি নানা অসুখও আক্রমণ করতে পারে।

কাশি নিরাময়ে

– তাপমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জামাকাপড় পরতে হবে।

– ধূমপান ও বায়ুদূষণ কাশির কারণ, তাই ধূমপান পরিহারের চেষ্টা করতে হবে।

– রোদে বা গরমে শরীর ঘেমে গেলেও সরাসরি এসিতে যাওয়া অনুচিত। ঘামে ভেজা পোশাক খুলে ঘাম মুছে তার পরে যেতে হবে।

– লিকার চা, কুসুম গরম পানিতে মধু ও লেবুর রস, গরম স্যুপ ইত্যাদি কাশি সারাতে সাহায্য করে।

– গরম পানির ভাপ নিতে পারেন, দীর্ঘদিন ধরে কাশিতে ভুগলে।

– খুব সকালে এবং রাতে গোসল না করাই ভালো।

– বিশেষ করে ধূমপায়ীরা সতর্ক হোন ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

কাশি সব সময়ই বিব্রত অবস্থার সৃষ্টি করে। তবে সচেতনতা এবং ঘরোয়া পদ্ধতিতে প্রাথমিকভাবে কাশি থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া সম্ভব। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনোরকম অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ খাওয়া থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকতে হবে। এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

Leave a Comment