আল্লাহতায়ালার নামের উসিলায় দোয়া

আল্লাহতায়ালার গুণবাচক নামগুলো নির্দিষ্ট সংখ্যায় সীমিত নয়। আল্লাহতায়ালার জ্ঞান ভাণ্ডারে যে সব নাম সংরক্ষিত রেখেছেন, তা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।

আর যা অজ্ঞাত তা সীমিত হতে পারে না।

এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহর এমন নিরানব্বইটি নাম রয়েছে, যে ব্যক্তি এগুলো মুখস্ত করবে, সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে। ’

বর্ণিত হাদিসে কিন্তু এটা বুঝা যাচ্ছে না যে, আল্লাহতায়ালার নাম মাত্র নিরানব্বইটি।

বরং হাদিসের অর্থ হলো- আল্লাহতায়ালার নামগুলোর মধ্যে এমন নিরানব্বইটি নাম রয়েছে, যা মুখস্ত করলে জান্নাতে যাওয়া যাবে। এতে বুঝা যায়, এই নিরানব্বইটি নাম ব্যতীত আল্লাহতায়ালার আরও নাম রয়েছে।

যেমন আরবরা বলে থাকে, আমার এমন একশ’টি ঘোড়া রয়েছে; যা আমি আল্লাহর রাস্তায় জেহাদের জন্য প্রস্তত করে রেখেছি। বাক্যটির অর্থ এই নয়, তার কাছে ঘোড়ার সংখ্যা মাত্র একশ’টি। বরং তার কাছে এমন একশ’টি ঘোড়া আছে, যা আল্লাহর রাস্তায় জেহাদের জন্য প্রস্তত রয়েছে। অন্য কাজের জন্য আরও ঘোড়া থাকতে পারে।
বস্তুত আল্লাহতায়ালা গুণবাচক নামের সংখ্যা যাই হোক এগুলো শুধু কাগজে লিখে মুখস্ত করা উদ্দেশ্য নয়। বরং উদ্দেশ্য হলো-
১. ভালোভাবে নামগুলো মুখস্ত করা।
২. নামগুলোর অর্থ অনুধাবন করা।
৩. নামগুলোর দাবি অনুযায়ী আল্লাহতায়ালার ইবাদত করা। আর তা দু’ভাবে হতে পারে-
ক. আল্লাহতায়ালার নামসমূহের উসিলা দিয়ে তার নিকট দোয়া করা। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহর অনেক সুন্দর সুন্দর নাম রয়েছে, সেই নামগুলোর উসিলায় তার কাছে দোয়া করো। ’ -সূরা আরাফ: ১৮০
আপনি যা কামনা করেন তার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ একটি নাম নির্বাচন করে সেই নামটি উল্লেখ করে দোয়া করবেন। যেমন ক্ষমা চাওয়ার সময় আপনি বলবেন- ইয়া গাফুর! ইগফিরলি। অর্থ হে ক্ষমাশীল! আমাকে ক্ষমা করুন। ক্ষমা চাওয়ার সময় এটা বলা ঠিকা নয়, হে কঠোর শাস্তি দাতা! আমাকে ক্ষমা করুন। বরং বলতে হবে, হে কঠোর শাস্তি দাতা! আমাকে আপনার শাস্তি হতে রেহাই দিন।

খ. আপনার ইবাদতগুলোর মধ্যে এমন কিছু থাকা চাই, যা আল্লাহর নামগুলোর দাবিকে আবশ্যক করে। রাহিম নামের দাবি হলো- রহমত করা। সুতরাং আপনি এমন আমল করবেন, যা আল্লাহর রহমত নাজিলের কারণ হয়। এটাই আল্লাহর নামগুলো মুখস্ত করার অর্থ। আল্লাহর নামগুলোর দাবিকে আবশ্যক করার মতো আমলই জান্নাতে প্রবেশের মূল্য হতে পারে।

Leave a Comment