যৌন সম্পর্ক নিয়ে মুখবন্ধ রাখতে গোপনে অর্থ দেওয়ার অভিযোগে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জেল হওয়া ‘উচিত হবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন আলোচিত সাবেক পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলস।
সংবাদমাধ্যম ফক্স নেশনসকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে তার যে অপরাধ, সেটির শাস্তি কারাদণ্ডযোগ্য বলে আমি মনে করি না। আমি অন্য যে বিষয়টি ভাবছি তা হল, তিনি আসলেই সেই অপরাধ করেছেন।’
৪৪ বছর বয়সী স্টর্মি ড্যানিয়েলসের দাবি, ট্রাম্প ও তার মধ্যে যৌন সম্পর্ক হয়েছিল এবং ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ওই বিষয়ে চুপ থাকতে তাকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দিয়েছিলেন ট্রাম্পের আইনজীবী। ওই অভিযোগে ফৌজদারি মামলায় বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন ট্রাম্প।
অবশ্য ড্যানিয়েলসের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের খবর ২০১৮ সালে ছড়ানোর পর থেকেই ট্রাম্প সেটি অস্বীকার করে আসছেন।
‘নন ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট’ বা তথ্য না প্রকাশ করার চুক্তির বিনিময়ে কাউকে অর্থ দেওয়া অবৈধ নয়। কিন্তু যেহেতু সেই অর্থ দেওয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এক মাস আগে, সেহেতু ট্রাম্পের সমালোচকদের যুক্তি, ওই অর্থ নির্বাচন প্রচার বিধি লঙ্ঘন করতে পারত।
তবে এ মামলার মূল অভিযোগ, স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে দেওয়া অর্থ ট্রাম্প তার আইনজীবী কোহেনকে দেওয়া ‘লিগ্যাল ফি’ হিসেবে দেখিয়ে ব্যবসার খরচ বলে চালিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তিনিই প্রথম সাবেক প্রেসিডেন্ট যিনি ফৌজদারি মামলায় আদালতে বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়েরের মধ্য দিয়ে মামলার বিচার কাজ শুরু হয়।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এদিন ৩৪টি অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে গোপনে অর্থ প্রদান এবং প্রাক্তন প্লেবয় মডেল কারেন ম্যাকডুগালের সঙ্গেও সম্পর্কের খবর না ছাপতে অর্থ দেওয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবসায়িক নথি জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়।
২০২০ সালে নির্বাচনের হেরে ফল পাল্টানোর চেষ্টা ও নথি জালিয়াতির অভিযোগে ওয়াশিংটনে তদন্ত চলছে ৭৬ বছর বয়সী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। সেইসঙ্গে জর্জিয়াতে হেরে ফল পাল্টানোর চেষ্টার অভিযোগেও একটি পৃথক তদন্ত চলছে। আর ম্যানহটনের প্রসিকিউটররা তার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে নির্বাচনী প্রচারের আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন।
২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থীদের দৌড়ে এগিয়ে আছেন ট্রাম্প। ড্যানিয়েলসকে অর্থ দেওয়ার মামলায় আগামী ৪ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানিতে তাকে সশরীরে হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দেশটির আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি মামলা এক বছর পর্যন্ত নাও চলতে পারে। আর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যা অভিযোগ, দোষী সাব্যস্ত হলেও আইনগতভাবে তাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া যাবে না।
ফক্স নেশনসের পিয়ার্স মরগ্যানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্টর্মি ড্যানিয়েলস বলেন, মামলাটি বিচারের জন্য গেলে তিনি সাক্ষ্য দেবেন।
‘আমার গোপন করার কিছুই নেই। আমিই একমাত্র সত্যি কথা বলছে।’